70°F শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মেনু

যুদ্ধবিরতি শেষে পাকিস্তানের ভয়াবহ বিমান হামলায় আফগানিস্তানে নিহত ৪০, আহত শতাধিক

Online Desk, Boston Bangla

প্রকাশ: ১৮ অক্টো ২০২৫ | নিউজটি দেখেছেন: ৩২
যুদ্ধবিরতি শেষে পাকিস্তানের ভয়াবহ বিমান হামলায় আফগানিস্তানে নিহত ৪০, আহত শতাধিক

আফগানিস্তান–পাকিস্তান সীমান্তে আবারও রক্তপাত।
অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান ভয়াবহ বিমান ও আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক শহরে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এ হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত১৭০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ জানায়, নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক — যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
স্পিন বোলদাকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা করিমুল্লাহ জুবাইর আগা নিশ্চিত করেছেন যে শহরের বেশিরভাগ হাসপাতাল আহতদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

যুদ্ধবিরতি ভেঙে নতুন হামলা

১১ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দুই দেশ ১৫ অক্টোবর থেকে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। কিন্তু ১৭ অক্টোবর স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে সেই বিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই পাকিস্তান নতুন করে বিমান হামলা শুরু করে।

স্থানীয় হাজি বাহরাম নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী তোলো নিউজকে বলেন,

“আমি জীবনে এমন নৃশংসতা দেখিনি। যারা নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করে, তারা নিরীহ নারী ও শিশুদের ওপর এমন হামলা চালিয়েছে — এটা অকল্পনীয়।”

বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল আক্রমণও

শুধু বিমান নয়, পাকিস্তানি স্থলবাহিনীও সীমান্তের নোকলি, হাজি হাসান কেলাই, ওয়ার্দাক, কুচিয়ান, শহীদ ও শোরবাক এলাকাগুলোতে আর্টিলারি গোলাবর্ষণ চালায়। এতে বহু বাড়িঘর, দোকানপাট ও বাজার এলাকা ধ্বংস হয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রের দাবি, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

সংঘাতের পেছনে টিটিপি ইস্যু

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নতুন সংঘাতের মূল কারণ তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)—যা একসময় পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছিল। সংগঠনটি এখন আবারও সক্রিয় হয়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টি করছে।

২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই টিটিপির কার্যক্রম আরও বেড়ে যায়। ইসলামাবাদের অভিযোগ, আফগান তালেবান সরকার তাদের আশ্রয় ও সহায়তা দিচ্ছে, যদিও কাবুল এসব অভিযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে।

সংঘাতের সূত্রপাত: টিটিপি নেতা নিহত হওয়ার পর

৯ অক্টোবর পাকিস্তানের বিমান হামলায় কাবুলে টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ নিহত হন। তার পরদিন থেকেই দুই দেশের সীমান্তে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। টানা চার দিনের যুদ্ধের পর সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, মাত্র দুই দিন পরই সেটি ভেঙে পড়ে রক্তক্ষয়ী আকারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন নিরাপত্তা সংকট তৈরি হতে পারে।