70°F শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মেনু

সারা দেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা, রাজধানীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

Online Desk, Boston Bangla

প্রকাশ: ০৯ নভে ২০২৫ | নিউজটি দেখেছেন: ২৩
সারা দেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা, রাজধানীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থানকালে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

এর আগে সকালে সকাল ৯টা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হাজারো শিক্ষক শহিদ মিনারে সমবেত হন। তারা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে এবং সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর সমন্বয়ে থাকা চারটি সংগঠন এই কর্মসূচি পরিচালনা করছে। সংগঠনগুলো হলো—বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম–শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন–লিপি) এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন,

“আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের উপর বর্বর হামলা চালিয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলবে এবং শহিদ মিনারে অবস্থান অব্যাহত থাকবে।”

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষকরা শাহবাগ অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ডিএমপি’র এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিকেল ৪টার দিকে আন্দোলনকারীদের একাংশ ব্যারিকেড ভেঙে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’র দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, যমুনা ভবন ও সংলগ্ন এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও শিক্ষকরা তা উপেক্ষা করে অগ্রসর হন। রাষ্ট্রীয় স্থাপনার নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ বাধ্য হয় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে।

মাগুরা সদর উপজেলার রাজারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামীম বিল্লাহ বলেন,

“আমাদের কলম নিক্ষেপ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। শতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন।”

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ সরকারের কাছে তিনটি মূল দাবি জানিয়েছে—
1️⃣ সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা প্রদান,
2️⃣ ১০ বছর ও ১৬ বছর চাকরির পর উচ্চতর গ্রেড প্রদানের জটিলতার স্থায়ী সমাধান,
3️⃣ শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।

এদিকে ঢাকা–চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপে নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন শিক্ষকরাও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে এই আন্দোলন আরও ব্যাপক আকার ধারণ করবে।