রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় রহস্যজনক এক সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, যাতে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে এই রোগটি, যার উপসর্গ গবাদিপশুর মৃত্যুর পর থেকেই দেখা যাচ্ছে।
রোগের ধরন ও উপসর্গ
আক্রান্তদের শরীরে প্রথমে ফুসকুড়ি দেখা যাচ্ছে, যা ধীরে ধীরে যন্ত্রণাদায়ক ঘা এবং গভীর ক্ষতে পরিণত হচ্ছে। অনেক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, অসুস্থ পশুর সংস্পর্শে আসার পরই তারা এই রোগে আক্রান্ত হন। পীরগাছার তাম্বুলপুর, ছাওলা, পারুল, ও ইটাকুমারীসহ পাঁচটি ইউনিয়নের বেশিরভাগ আক্রান্তই কৃষক, যারা গরু ও ছাগল পালনের সাথে জড়িত। পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আঁখি সরকার জানান, উপসর্গ দেখে রোগটিকে অ্যানথ্রাক্স বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, যদিও তা নিশ্চিত হতে এখনো নমুনা পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়নি।
কর্তৃপক্ষের দায় চাপানো
এমন গুরুতর পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্য বিভাগ এবং প্রাণিসম্পদ বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। দুই পক্ষই একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে। সিভিল সার্জন ডা. শাহিন সুলতানা বলছেন, এমন রোগের ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ বিভাগকে প্রথমে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। অন্যদিকে, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু সাঈদ দাবি করেছেন, এটি জিনগত সমস্যা হতে পারে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচিত ছিল আগে ব্যবস্থা নেওয়া।
জাতীয় মহামারির ঝুঁকি
জনস্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি বেলাল হোসেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, যদি দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে এই রোগ একটি জাতীয় মহামারিতে রূপ নিতে পারে। জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। স্থানীয়রা এই ভয়াবহ রোগ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত চিকিৎসা, সচেতনতা এবং টিকাদান কর্মসূচির দাবি জানিয়েছেন।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে