ঢাকা দক্ষিণ সিটিকরপোরেশনের (ডিএসসিসি) বিরুদ্ধে এক চাঞ্চল্যকর দুর্নীতিরঅভিযোগ উঠেছে। বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকেমেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে ৪০ দিন নগরভবন বন্ধ থাকলেও, এইসময়ে কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত গাড়িতেপ্রায় কোটি টাকার তেলখরচ দেখানো হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি মাসে জ্বালানি খাতেসংস্থাটির প্রায় ৫ কোটি টাকাখরচ হয়, যা মেও জুন মাসেও একইছিল—যদিও এই সময়টায়কার্যক্রম প্রায় বন্ধ ছিল।
জ্বালানি খরচ নিয়ে প্রশ্ন
নগর ভবন বন্ধথাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন ১৪-১৫ লিটারতেল ব্যবহারের হিসাব দেখিয়েছেন অনেক কর্মকর্তা। যেমন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরের গাড়ি ৪০ দিনে ৬০০লিটার তেল খরচ করেছেবলে নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যারআনুমানিক মূল্য ৬১ হাজার ২০০টাকা। অথচ তার চালকনিজেই স্বীকার করেছেন, আন্দোলনের সময় গাড়ি প্রতিদিনচলেনি। একইভাবে, প্রধান সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানও এই সময়ে ১৪লিটার করে মোট ৫৬০লিটার তেল ব্যবহার করেছেন।কর্মকর্তারা এর সপক্ষে কোনোসুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি, বরংদাবি করেছেন যে তারা অন্যস্থানে জরুরি কাজ করেছেন। কিন্তুঅভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, নিয়মিত অফিস করার মতোকোনো ব্যবস্থা তখন ছিল না।
দুর্নীতির চক্র
ডিএসসিসির একাধিক কর্মকর্তার মতে, এই জ্বালানিখরচ বেশিরভাগই কাগজে-কলমে দেখানো হয়।কর্মকর্তারা প্রায়শই ব্যক্তিগত কাজে সরকারি গাড়িব্যবহার করেন এবং অতিরিক্ততেল বরাদ্দ নিয়ে চালকদের কাছে বিক্রি করেদেন। এই প্রক্রিয়ায় চালকও তেল ইস্যুকারী কর্মকর্তাদুজনেই লাভবান হন। এই ধরনেরযোগসাজশমূলক চক্রের কারণে জনগণের করের টাকা অবৈধভাবেআত্মসাৎ করা হচ্ছে।
ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এই ঘটনাকে সরকারিপ্রতিষ্ঠানে জবাবদিহিহীনতার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ বলেঅভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, যারাসরাসরি এই অপরাধে জড়িতএবং যারা এই অনিয়মকেদাপ্তরিকভাবে অনুমোদন দিয়েছেন, তাদের কাউকেই জবাবদিহির ঊর্ধ্বে রাখা উচিত নয়।ডিএসসিসির বর্তমান প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়াএই বিষয়ে তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন।
এই ঘটনা আবারওপ্রমাণ করল যে সরকারিপ্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবকতটা প্রকট, যার ফলে জনগণেরসম্পদ প্রতিনিয়ত অপচয় হচ্ছে।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে