অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, বিশৃঙ্খলাকারীদের চিহ্নিত করতে ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ থাকে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে উন্নতমানের সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে, যাতে প্রতিটি কার্যক্রম সরাসরি মনিটরিং করা যায়। তিনি বলেন, দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে—যার ৬০ শতাংশ প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আগামী জানুয়ারির মধ্যেই পুরো প্রশিক্ষণ শেষ হবে। এছাড়া এবারের নির্বাচনে ৩৩ হাজার বিজিবি সদস্য (১,১০০ প্লাটুন) এবং প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে নিরাপত্তা নিশ্চিতে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওসিদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন কোনো আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত না হয়, সে বিষয়েও কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সিসিটিভির পাশাপাশি পর্যাপ্তসংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে, যাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় থাকে।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আগের তুলনায় তাদের আকস্মিক মিছিল অনেক কমে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণেই তা সম্ভব হয়েছে।”
পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নিয়েও তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। বলেন, “বর্তমানে পাহাড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী শারদীয় দুর্গাপূজা বানচাল করার ষড়যন্ত্র করেছিল, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর সতর্ক ভূমিকার কারণে তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে।”
এ সময় তিনি জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে। শুধু মাদকবাহী নয়, বরং মূল গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
‘উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হেসে বলেন, “আমি দেশের বাইরে যাব কেন? আমার পরিবার এখানেই থাকে। বিদেশে কার কাছে যাব?”
সেনা কর্মকর্তাদের বিচার প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠলে তিনি বলেন, “সবকিছুই আইন অনুযায়ী হবে। আইনে যা বলা আছে, সেটাই অনুসরণ করা হবে।”
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে