ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) শেষ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে মামলার ৫৪তম সাক্ষী হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা জবানবন্দি দেবেন। প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামীম শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ১১টায় আদালতে তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং জব্দকৃত ভিডিও প্রমাণ সরাসরি প্রচার করা হবে।
এতদিনে এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন শহীদ আবু সাঈদের পরিবারসহ আন্দোলনে স্বজন হারানো অনেকে। গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামীম শুনানি পরিচালনা করছেন। এ সময় অন্য প্রসিকিউটররাও আদালতে উপস্থিত থাকেন।
অন্যদিকে, পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন যুক্তিতর্ক তুলে ধরছেন। আর রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট যায়েদ বিন আমজাদ।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল-১ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। পরবর্তীতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ মামলার পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। একটি আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে গুম-খুনের অভিযোগে দায়ের হয়েছে, অন্যটি মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার এবং প্রশাসনের অংশবিশেষ গণহত্যা ও নানামুখী মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে—এমন অভিযোগে দেশে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া চলছে।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে