অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সময়ে চরম খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষে মারা গেছেন আরও ৭ জন। রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলের সামরিক অভিযানে গত একদিনে আরও ২২৬ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে চলমান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮৬ জনে। এখনো অনেক হতাহত ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এছাড়া, সীমান্তে মানবিক সহায়তা গ্রহণ করতে গিয়ে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জন নিহত এবং অন্তত ১৩২ জন আহত হয়েছেন। চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত এই ধরনের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন মোট ১ হাজার ৯৩৮ জন, আহত হয়েছেন আরও ১৪ হাজার ৪২০ জন।
গাজায় চলমান খাদ্য সংকট পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত একদিনে অনাহারে মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ২৫৮ জন ফিলিস্তিনির, যার মধ্যে ১১০ জন শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরাইলি নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়েছিল। এর জবাবে ইসরাইল টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে আসছে।
যদিও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, তবে তা ভেঙে ১৮ মার্চ থেকে আবারও পূর্ণমাত্রায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী (আইডিএফ)।
এরই মধ্যে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। একইসঙ্গে ইসরাইল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলার সম্মুখীন রয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ থাকায় গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। ২ মার্চ থেকে ইসরাইল গাজার সব সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে রেখেছে, যার ফলে খাদ্য, ওষুধ ও ন্যূনতম মানবিক সহায়তা সরবরাহও কঠিন হয়ে পড়েছে।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে