দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি পূরণ ও শাহবাগে শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন সহকারী শিক্ষকরা।
রোববার (৯ নভেম্বর) সকাল থেকে সারাদেশের প্রায় ৬৫ হাজারেরও বেশি বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। একই সঙ্গে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিও অব্যাহত রেখেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ।
তিনি জানান, “আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে। পাশাপাশি শাহবাগে পুলিশের নৃশংস হামলারও বিচার চাই আমরা।”
এর আগে বিকেলে শাহবাগে ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বহু শিক্ষক আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে শতাধিক শিক্ষক আহত হন, এবং অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
ঘটনার পর আন্দোলনরত শিক্ষকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আশ্রয় নেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের শব্দে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ও চারদিকে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
১️⃣ সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন প্রদান
২️⃣ উচ্চতর গ্রেডের জটিলতার স্থায়ী সমাধান
৩️⃣ সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় ৬৫,৫৬৭টি, যেখানে কর্মরত আছেন ৩ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক। ফলে কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সরকার প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এই সিদ্ধান্তে সহকারী শিক্ষকরা বৈষম্যের অভিযোগ এনে আন্দোলনে নামেন।
অন্যদিকে, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ সরকারকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য। তারা জানিয়েছে, দাবি পূরণ না হলে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
এছাড়া সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে তারা পরীক্ষা বর্জন ও আমরণ অনশন শুরু করবে।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে