70°F শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মেনু

ঢাকা বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুনে শত কোটি টাকার ক্ষতি, ব্যবসায়ীরা বলছেন ‘বিলিয়ন ডলারের বিপর্যয়’

Online Desk, Boston Bangla

প্রকাশ: ১৯ অক্টো ২০২৫ | নিউজটি দেখেছেন: ৩২
ঢাকা বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুনে শত কোটি টাকার ক্ষতি, ব্যবসায়ীরা বলছেন ‘বিলিয়ন ডলারের বিপর্যয়’

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ আমদানি-রপ্তানি পণ্য ধ্বংস হয়ে গেছে। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটসংলগ্ন এলাকায় আগুনের সূত্রপাত হয়, যা মুহূর্তেই চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও এখনো পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ব্যবসায়িক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল এয়ার এক্সপ্রেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি কবির আহমেদ জানিয়েছেন, প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। বর্তমান ডলার বিনিময় হার অনুযায়ী তা প্রায় ১২ হাজার ২০০ কোটি টাকারও বেশি।

তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় কার্গো এক্সপ্রেস, গুদামঘর (ওয়্যারহাউজ), পণ্যবাহী বিমান এবং বিমানবন্দরের অন্যান্য কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে গেছে। এতে শুধু ব্যবসায়ী নয়, বরং দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যই বড় ধরনের ধাক্কা খাবে।

কার্গো ভিলেজ মূলত আমদানি ও রপ্তানি পণ্য সংরক্ষণের জায়গা। আমদানিকারক বা তাদের প্রতিনিধিরা শুল্কায়ন সম্পন্নের পর এখান থেকেই পণ্য গ্রহণ করেন। সাধারণত পচনশীল পণ্য—যেমন ফল, সবজি ও তৈরি পোশাক—২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এখান থেকে পাঠানো হয়। কিন্তু রপ্তানি জটিলতা বা শুল্ক বিলম্বের কারণে অনেক চালান কয়েকদিন পর্যন্ত এখানেই থাকে।

আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল বলেন, “এই অগ্নিকাণ্ডে অসংখ্য আমদানিকারকের পণ্য সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পরেই বোঝা যাবে কারা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিমা দাবির প্রক্রিয়াতেও সময় লাগবে।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির অন্যতম কেন্দ্র হওয়ায় এই ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। এখানে কেবল পণ্যই নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্রও পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO)–এর নিয়ম অনুযায়ী, বিমানবন্দরের এই অংশ পুনরায় চালু করার আগে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা মূল্যায়ন ও পরিদর্শন সম্পন্ন করতে হবে।

দেশের বাণিজ্য বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে রপ্তানি লিড টাইম বৃদ্ধি, ডেলিভারি সংকট এবং বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা হ্রাস—সব মিলিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।