ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ব্যাপক ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। দীর্ঘ ৩০ বছর পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদেই জয়লাভ করেছেন এই জোটের প্রার্থীরা। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন থেকে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
ভিপি পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান, যিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮৪ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্রশিবিরের এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবু বাকের মজুমদার ২ হাজার ১৩১ ভোট, আশিকুর ৫২৬ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া ৪৬ ভোট পেয়েছেন।
সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদেও জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান। তিনি ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট।
নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয় সোমবার বিকেল ৪টায়। এরপর রাতভর চলে ভোট গণনা। রাতে বিভিন্ন হল থেকে ফলাফল আসতে শুরু করলে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান এবং স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী উমামা ফাতেমা।
বিশ্লেষকদের মতে, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের এই নিরঙ্কুশ জয় ক্যাম্পাস রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে ভোটগ্রহণের স্বচ্ছতা নিয়ে বিরোধী পক্ষের অভিযোগ এবং নির্বাচন বর্জনের ঘটনাগুলো ভবিষ্যতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে