সাম্প্রতিক সময়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একাধিক ফ্লাইটে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় যাত্রীদের নিরাপত্তা ও আস্থা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে সংস্থাটি। কারিগরি ত্রুটির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও প্রতিরোধে একাধিক তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশন কবীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন ফ্লাইটে ঘটে যাওয়া কারিগরি সমস্যাগুলোর বিস্তারিত পর্যালোচনার জন্য চার সদস্যের একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতিটি ঘটনার রক্ষণাবেক্ষণ রেকর্ড এবং অপারেশনাল প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করে ত্রুটির প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করবে এবং কোনো অবহেলা বা গাফিলতি থাকলে দোষীদের চিহ্নিত করবে। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে জনবল ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। একজন প্রকৌশলী কর্মকর্তাকে শাস্তিমূলকভাবে বদলি এবং চট্টগ্রামে কর্মরত আরেকজন প্রকৌশলী কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজনকে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কারিগরি সক্ষমতা বাড়াতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আউটস্টেশনে (যেমন: জেদ্দা, দুবাই, মদিনা, দাম্মাম, আবুধাবি ও শারজাহ) অতিরিক্ত চাকা মজুত রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক প্রতিস্থাপন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় চাকা সংগ্রহের জন্য ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে। জেদ্দায় চাকা ফেটে যাওয়ার ঘটনা তদন্তে ফ্লাইট অপারেশনস পরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, রাত্রিকালীন বিশেষ রক্ষণাবেক্ষণ শিফট চালু করা হয়েছে যা ১৮ আগস্ট থেকে কার্যকর রয়েছে। বিমানের ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম পর্যালোচনার পাশাপাশি বোয়িংয়ের সঙ্গে আলোচনা করে কম্পোনেন্ট সার্ভিসেস প্রোগ্রাম (CSP) তালিকা এবং রিকমেন্ডেড স্পেয়ার পার্টস লিস্ট (RSPL) পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। বাস্তব তথ্যের ভিত্তিতে যন্ত্রাংশ সরবরাহ নিশ্চিত করতে টেইলরড পার্ট প্যাকেজ (TPP) ব্যবস্থাও পর্যালোচনার আওতায় আনা হয়েছে।
প্রকৌশলীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে রি-কারেন্ট প্রশিক্ষণ শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন অ্যাপ্রেন্টিস মেকানিক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যাতে প্রযুক্তিগত জনবল বৃদ্ধি এবং স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সম্ভব হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই বিমানের অগ্রাধিকার। তাই প্রযুক্তিগত নির্ভরযোগ্যতা বজায় রাখতে এবং সেবার মান উন্নত করতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে