77°F রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মেনু

২৮ পদে লড়াই, ২৩ পদে শিবির জোট জয়ী

বস্টন বাংলা অনলাইন ডেস্ক, Boston Bangla

প্রকাশ: ১০ সেপ্টে ২০২৫ | নিউজটি দেখেছেন: ২২
২৮ পদে লড়াই, ২৩ পদে শিবির জোট জয়ী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলগুলোর। ২৮টি কার্যনির্বাহী পদের মধ্যে ২৩টিতেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। শীর্ষ তিন পদসহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদক ও সদস্য পদে তাদের নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছে।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন ডাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

ভিপি পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। জিএস পদে একই প্যানেলের এসএম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয় পান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের তানভীর বারী হামীম ৫ হাজার ২৮৩ ভোটে দ্বিতীয় হন, এবং প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।

এজিএস পদেও ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। ছাত্রদলের প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট।

শুধু শীর্ষ তিনটি পদ নয়, সম্পাদকীয় এবং সদস্য পদেও ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতেমা তাসনিম জুমা ১০ হাজার ৬৩১ ভোট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ইকবাল হায়দার ৭ হাজার ৮৩৩ ভোট এবং আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে খান জসিম পেয়েছেন ৯ হাজার ৭০৬ ভোট। ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে আসিফ আবদুল্লাহ ৯ হাজার ৬১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরমান হোসাইন পেয়েছেন ৭ হাজার ২৫৫ ভোট।

কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা ৯ হাজার ৯২০ ভোট, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে সাখাওয়াত জাকারিয়া ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট এবং স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এমএম আল মিনহাজ পেয়েছেন ৭ হাজার ৩৮ ভোট। ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে মাজহারুল ইসলাম ৯ হাজার ৩৪৪ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন।

সদস্য পদেও ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের একচ্ছত্র আধিপত্য দেখা গেছে। সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন— সাবিকুন্নাহার তামান্না (১০ হাজার ৪৮ ভোট), সর্বমিত্র (৮ হাজার ৯৮৮), আনাস ইবনে মুনির (৫ হাজার ১৫), ইমরান হোসেন (৬ হাজার ২৫৬), তাজিনুর রহমান (৫ হাজার ৬৯০), মেফতাহুল হোসেন আল মারুফ (৫ হাজার ১৫), বেলাল হোসাইন অপু খান (৪ হাজার ৮৬৫), রাইসুল ইসলাম (৪ হাজার ৫৩৫), মো. শাহিনুর রহমান (৪ হাজার ৩৯০), মোছা. আফসানা আক্তার (৫ হাজার ৭৪৭) ও রায়হান উদ্দীন (৫ হাজার ৮২ ভোট)।

তবে প্যানেলের বাইরে জয় পাওয়া পাঁচজন প্রার্থীও রয়েছেন। তারা হলেন— সমাজসেবা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবাইর বিন নেছারী, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র সানজিদা আহমেদ তন্বী এবং সদস্য পদে হেমা চাকমা ও উম্মু উসউয়াতুন রাফিয়া।

এর আগে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় ডাকসুর ৩৮তম নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে ২৮টি পদের বিপরীতে ৪৭১ জন প্রার্থী এবং ১৮টি হল সংসদের ২৩৪টি পদের জন্য ১,০৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

ডাকসুতে এবার মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ এবং ১৩টি ছাত্র হলে ভোটার ছিলেন ২০ হাজার ৯১৫ জন।