যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সোমা এস. সাঈদ। তিনি নিউইয়র্ক স্টেট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং নিউইয়র্কের কুইন্স অঞ্চলের প্রথম মুসলিম নারী বিচারপতি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
গত বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে সোমা সাঈদের পরিবারের সদস্য বুরহান চৌধুরী বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন। নির্বাচনে সোমা সাঈদ প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে এই ঐতিহাসিক জয় অর্জন করেন।
নিজের অর্জন নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় বিচারপতি সোমা সাঈদ বলেন,
“এটি শুধু আমার বিজয় নয়, আমার পরিবার, সমাজ এবং আমার মাতৃভূমি বাংলাদেশেরও জয়।”
সোমা সাঈদের জন্ম টাঙ্গাইল জেলায়। তাঁর বাবা আফতাব উদ্দিন সাঈদ ছিলেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট এবং মা ছিলেন একজন প্রধান শিক্ষিকা। শৈশব থেকেই শিক্ষা ও ন্যায়বিচারের মূল্যবোধে বেড়ে ওঠা সোমা পেশাগত জীবনে যুক্তরাষ্ট্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ও নিষ্ঠার মাধ্যমে।
২০২১ সালে তিনি নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স কাউন্টি থেকে সিভিল কোর্টের বিচারক হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর থেকে আইনি অঙ্গনে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন ন্যায়বিচার, বৈচিত্র্য এবং মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতিশীল কণ্ঠস্বর হিসেবে।
তিনি বর্তমানে নিউইয়র্কের কুইন্সে বসবাস করছেন তাঁর স্বামী মিজান চৌধুরীর সঙ্গে, যিনি একজন আইটি বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক কৌশলবিদ।
বিচারপতি সোমা সাঈদ নিউইয়র্কের আইনি পরিমণ্ডলে বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নিউ ইয়র্ক সিটি সম-অধিকার প্রয়োগ পরিষদের সহ-সভাপতি, নিউ ইয়র্ক সিটি ন্যায়বিচারের অধিকার পরিষদের বোর্ড সদস্য, এবং নিউইয়র্ক মার্কিন-এশীয় বিচারকদের সংগঠনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া তিনি ছিলেন কুইন্স কাউন্টি উইমেনস বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম দক্ষিণ এশীয় ও মুসলিম নারী সভাপতি, যা যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থায় বাংলাদেশি নারীদের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে।
আইন, ন্যায়বিচার ও সামাজিক সমতার পক্ষে তাঁর নিরলস কাজ প্রমাণ করে— প্রবাসের মাটিতেও বাংলাদেশি মেধা ও মর্যাদা বিশ্বমঞ্চে উজ্জ্বলভাবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে