70°F শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মেনু

তেহরানে শতাব্দীর ভয়াবহ খরা: পানির সংকটে আতঙ্ক, প্রার্থনায় লাখো মানুষ

Online Desk, Boston Bangla

প্রকাশ: ১৫ নভে ২০২৫ | নিউজটি দেখেছেন: ২২
তেহরানে শতাব্দীর ভয়াবহ খরা: পানির সংকটে আতঙ্ক, প্রার্থনায় লাখো মানুষ

ইরানের রাজধানী তেহরানে ভয়াবহ জলবায়ু সংকট—বৃষ্টিহীনতার কারণে ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ছে জনজীবন। শীত মৌসুমেও যেখানে তুষারে ঢেকে থাকার কথা পাহাড়ি অঞ্চলগুলো, সেখানে এ বছর দেখা মিলেনি একটি ফোঁটা তুষারেরও। বরং দেশের অর্ধেকেরও বেশি প্রদেশ টানা কয়েক মাস ধরে চরম শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত শতাব্দীর মধ্যে এটাই ইরানের সবচেয়ে মারাত্মক খরা।

স্থানীয় প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর তেহরানে বৃষ্টিপাত নেমে এসেছে রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে। পানির ঘাটতি এতটাই তীব্র আকার ধারণ করেছে যে, সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। এই সংকট থেকে মুক্তির আশায় শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) উত্তর তেহরানের ইমামজাদেহ সালেহ মসজিদে ভয়াবহ খরা দূর করতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ জনসমাবেশ ও প্রার্থনা আয়োজন করেন হাজারো মানুষ।

এর আগে গত সপ্তাহে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, যদি শীতের আগেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হয়, তবে তেহরানকে বাধ্য হয়ে অন্যত্র স্থানান্তর করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। পানির অপচয় রোধে কঠোর নির্দেশনার পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সংকট আরও গভীর হয়েছে। তবে সরকার পরে জানায়, শহর স্থানান্তরের প্রসঙ্গটি শুধুই চরম সতর্কতা হিসেবে বলা হয়েছিল।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলো—তেহরানের প্রায় ১ কোটি মানুষের জন্য পানি সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা বিবেচনা করছে সরকার। সাধারণত এই সময়ে দেশের বড় বড় বাঁধগুলোতে উল্লেখযোগ্য পানি মজুত থাকে। কিন্তু এখন একাধিক বাঁধ প্রায় শুকিয়ে গেছে—একটির পানি পুরোপুরি শেষ, আরেকটিতে মাত্র ৮ শতাংশ পানি অবশিষ্ট আছে। দেশের অন্যান্য প্রদেশেও পরিস্থিতি একইভাবে ভয়াবহ।

ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ বছর দেশজুড়ে মোট বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ১৫২ মিলিমিটার, যা গত ৫৭ বছরের তুলনায় ৪০% কম। ফলে দেশজুড়ে কৃষি, পানীয় জল, বিদ্যুৎ উৎপাদন—সব খাতে এক নজিরবিহীন সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।