সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা চুক্তির পর ভারত আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যে, রিয়াদ তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘পারস্পরিক স্বার্থ ও সংবেদনশীলতা’ বিবেচনায় রাখবে। সামা টিভি সূত্রে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সৌদি আরব ও পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এরপর শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতার ছাতার নিচে সৌদি আরব কার্যত প্রতিরক্ষাগতভাবে ঢুকে যাচ্ছে। চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এক দেশের ওপর আক্রমণকে উভয় দেশের ওপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, “ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব দীর্ঘদিন ধরে গভীর হচ্ছে। আমরা আশা করি, এই সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থ ও সংবেদনশীলতাকে গুরুত্ব দেবে।”
সৌদি আরব ভারতের অন্যতম প্রধান তেল সরবরাহকারী দেশ। চলতি বছর দুই দেশ অপরিশোধিত তেল ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহে সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি রিফাইনারি ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতে যৌথ প্রকল্পের সম্ভাবনা যাচাই করছে। জয়সওয়াল আরও উল্লেখ করেছেন, ভারতের নিরাপত্তা প্রস্তুতি সর্বাত্মক ও বহুমাত্রিক।
অন্যদিকে ইসলামাবাদ চুক্তিটিকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করেছে। চুক্তির আওতায় পাকিস্তান সৌদি আরবের সঙ্গে মক্কা ও মদিনার পবিত্র মসজিদগুলোর নিরাপত্তায় কৌশলগত অংশীদার হিসেবে কাজ করবে। সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির চুক্তি চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নেন।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশ সমসাময়িক ও সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াবে এবং সেনাবাহিনীকে আরও সমন্বিত করবে। কোনো বহিরাগত সশস্ত্র হামলা হলে সেটিকে উভয় দেশের ওপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে।
দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদী সামরিক সহযোগিতা, যৌথ মহড়া এবং প্রতিরক্ষা শিল্পে অংশীদারিত্বের ধারাবাহিকতায় এই চুক্তি নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ইসলামাবাদ ও রিয়াদ আশা করছে, এটি শুধু সামরিক নয়, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে উভয় দেশের জন্যও লাভজনক হবে।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে