নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শহরে প্রবেশ করলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) কর্তৃক জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে সম্মান জানানো হবে। মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি সেভেন-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নিউইয়র্ক ‘আন্তর্জাতিক আইনের শহর’, তাই মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
মামদানী জানান, গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে হামলা এবং সংঘাতে অমানবিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগে ২০২৪ সালে আইসিসি যে পরোয়ানা জারি করেছে, নিউইয়র্ক সেই সিদ্ধান্তকেই অনুসরণ করবে। তার ভাষায়, “আন্তর্জাতিক আইন মানা মানে সব ক্ষমতাধর ব্যক্তির ক্ষেত্রেই একই নিয়ম প্রয়োগ করা—সে নেতানিয়াহুই হোক, কিংবা ভ্লাদিমির পুতিন।”
তিনি আরও বলেন, নিউইয়র্কবাসীরা ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের পক্ষে। তাই যেকোনো আন্তর্জাতিক পরোয়ানা কার্যকর করতে সব আইনগত পথ খুঁজে দেখা হবে।
এর আগেও, গত অক্টোবর ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের সতর্কবার্তা দেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন—“আইনি সুযোগ মিললেই গ্রেপ্তারের ব্যাবস্থা নেওয়া হবে, কারণ শহরের নীতিমালা আন্তর্জাতিক ন্যায়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।”
তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য দেশ নয় এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যেই নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তারের বিরোধিতা করে আসছেন। এ প্রসঙ্গে মামদানীর বক্তব্য—নতুন কোনো আইন তৈরি নয়; বিদ্যমান আইনের সীমার মধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, যখন মামদানী কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করছেন, তখন বিদায়ী মেয়র এরিক অ্যাডামস ইসরায়েল সফরে রয়েছেন। সেখানে এক সাক্ষাৎকারে তিনি নেতানিয়াহুকে ১ জানুয়ারি মামদানীর শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন—ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য এটি শক্তিশালী বার্তা হবে। তার মতে, “ইসরায়েল ও নিউইয়র্কের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য।”
মেয়র-ইলেক্ট মামদানীও আশ্বস্ত করেছেন, নিউইয়র্কের ইহুদি জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষায় তিনি কঠোর দায়িত্ব পালন করবেন। এবিসি সেভেনকে তিনি বলেন, “ইহুদি নিউইয়র্কবাসীদের সুরক্ষা দেওয়া সিটির মেয়রের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব, এবং আমি তা যথাযথভাবে নিশ্চিত করবো।”
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে