অনেকের মধ্যে প্রচলিত ধারণা, খাওয়ার সময় কথা বললে গুনাহ হয়। আবার প্রশ্ন হয়, কোন দোয়া খাওয়ার সময় পড়া উচিত। আসলে এই বিষয়গুলোকে নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাওয়ার সময় কথাবার্তা বলা নিষিদ্ধ নয়। নবী মুহাম্মদ (সা.) নিজে ও সাহাবিরা খাওয়ার সময় একে অপরের সঙ্গে কথা বলতেন। হাদিসে বলা যে খাওয়ার সময় কথা বলা নিষিদ্ধ, তা ভিত্তিহীন বা বানোয়াট। তাই খাবারের সময় স্বাভাবিকভাবে কথা বলা কোনো গুনাহের কারণ নয়।
১. খাওয়ার শুরুতে:
খাওয়া শুরু করার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চারণ হতে পারে—
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
অর্থ: “পরম করুণাময়, দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।”
অথবা, “বিসমিল্লিাহি ওয়া আলা বারাকাতিল্লাহ”
অর্থ: “আল্লাহর নামে এবং তাঁর বরকতের ওপর খাওয়া শুরু করছি।”
রাসুল (সা.) বলেছেন, যে খাবারে বিসমিল্লাহ বলা হয় না, সেখানে শয়তানের অংশ থাকে। যদি খাওয়ার মাঝখানে মনে হয় যে বিসমিল্লাহ পড়া হয়নি, তখন বলুন—
“বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু”
অর্থ: “এর শুরু ও শেষ আল্লাহর নামে।”
২. খাবারের সময়:
উচ্চারণ: “আল্লহুম্মা বারিক লানা ফীহি ওয়া আত্ব’ইমনা খয়রম্ মিনহু”
অর্থ: “হে আল্লাহ! এই খাবারে আমাদের জন্য বরকত দান করুন এবং এর চেয়ে উত্তম খাবার দান করুন।”
৩. খাবার শেষে:
উচ্চারণ: “আলহামদুলিল্লাহিল্লাযী আতআমানা ওয়া সাকানা ওয়া জাআলানা মিনাল মুসলিমীন”
অর্থ: “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদের খাওয়ালেন, পান করালেন এবং মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।”
৪. দস্তরখান উঠানোর সময়:
উচ্চারণ: “আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাসীরান তায়্যিবান মুবারাকান ফীহি গায়রা মাকফিয়্যিন ওয়া লা মুওয়াদ্দায়িন ওয়া লা মুসতাগনান আনহু রাব্বানা”
অর্থ: “হে আল্লাহ! আপনার জন্য সমস্ত প্রশংসা যা অশেষ, পবিত্র ও বরকতময়। এই খাবারকে অপ্রচুর মনে বা চিরদিনের জন্য বিদায় দিয়ে বা এর প্রতি বিমুখ হয়ে উঠিনি।”
খাওয়া শুরু, চলাকাল ও শেষে সঠিক দোয়া পাঠ করলে খাবার আরামদায়ক হয় এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। খাওয়ার সময় কথা বলার বিষয়ে কোনো ভীতি নেই, এটি একেবারেই স্বাভাবিক এবং ইসলামের নিয়মের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে