70°F শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মেনু

জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয়: নিউইয়র্কের নতুন অধ্যায় নিয়ে বিশ্বমিডিয়ার প্রশংসা

Online Desk, Boston Bangla

প্রকাশ: ০৫ নভে ২০২৫ | নিউজটি দেখেছেন: ১২
জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয়: নিউইয়র্কের নতুন অধ্যায় নিয়ে বিশ্বমিডিয়ার প্রশংসা

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির জয়কে ঘিরে এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড়।

এক তরুণ, মুসলিম, আফ্রিকান-উৎপত্তি দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিকের এই জয়কে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো শুধু “নির্বাচনী ঘটনা” হিসেবে দেখেনি তারা এটিকে এক নতুন আমেরিকার প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করছে।

যুক্তরাজ্যের The Guardian:

“Zohran Mamdani elected mayor of New York City in historic win”

গার্ডিয়ান লিখেছে নিউইয়র্কের ইতিহাসে এটি এক যুগান্তকারী মুহূর্ত। বহুসাংস্কৃতিক আমেরিকার রাজনীতিতে নতুন এক যুগের সূচনা ঘটালেন মামদানি, যিনি “কমিউনিটি-রুটেড পলিটিক্স”-এর এক বাস্তব রূপ।

পত্রিকাটি বিশ্লেষণ করেছে কীভাবে তাঁর প্রচারণা নিম্নআয়ের মানুষের আবাসন, স্বাস্থ্য ও সামাজিক ন্যায্যতার প্রশ্নে নতুন আস্থা তৈরি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের Associated Press (AP):

“Zohran Mamdani wins New York City’s Democratic mayoral primary, defeating ex-Gov. Andrew Cuomo.”

এপি-র প্রতিবেদনে বলা হয় এই জয় শুধু একটি প্রাইমারি নয়, এটি একটি “পলিটিক্যাল রেভলিউশন”।

অ্যান্ড্রু কুওমোর মতো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে মামদানি প্রমাণ করেছেন, আমেরিকার শহুরে ভোটাররা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত।

সংবাদ সংস্থাটি উল্লেখ করেছে তাঁর প্রচারণার কেন্দ্রে ছিল affordable housing, public transport equity, ও নাগরিক অংশগ্রহণ।

Le Monde (ফ্রান্স):

“Zohran Mamdani’s meteoric rise in New York signals a widespread desire for change among Democrats.”

ফরাসি পত্রিকা Le Monde লিখেছে মামদানির এই উত্থান শুধু নিউইয়র্ক নয়, পুরো আমেরিকার ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতরকার প্রজন্মগত পরিবর্তনের প্রতীক।

তারা বলেছে, “যেভাবে ইউরোপে নতুন প্রজন্ম পরিবেশ ও ন্যায়ের প্রশ্নে রাস্তায় নেমেছে, ঠিক তেমনি নিউইয়র্কে মামদানি তাদের রাজনৈতিক প্রতিচ্ছবি।”

Financial Times (FT) – যুক্তরাজ্য/আন্তর্জাতিক:

“Donald Trump brands Zohran Mamdani a ‘100 % Communist Lunatic’.”

এফটি তাদের বিশ্লেষণে জানায় মামদানির দ্রুত জনপ্রিয়তা আমেরিকার পুরনো রাজনৈতিক কাঠামোকে কাঁপিয়ে দিয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে কটাক্ষ করে “কমিউনিস্ট” বললেও, এফটি মন্তব্য করেছে—“যাঁরা তাঁকে সমালোচনা করছেন, তারাই অজান্তে তাঁর শক্তি প্রমাণ করছেন।”

Al Jazeera (কাতার/আন্তর্জাতিক):

“Mamdani’s New York victory boosts pro-Palestine politics in US.”

আল জাজিরা লিখেছে মামদানির বিজয় শুধু প্রগতিশীল রাজনীতির নয়, আমেরিকায় “ফিলিস্তিনপন্থী ন্যায্যতার কথন”-এরও শক্তিশালী পুনর্জন্ম।

তারা উল্লেখ করেছে—“একজন আফ্রিকান-উৎপত্তি মুসলিমের নেতৃত্বে এমন জয় মার্কিন রাজনীতিতে নতুন সাংস্কৃতিক ও নৈতিক সাহসের সূচনা।”

The Economic Times (India):

“Zohran Mamdani called ‘Hamas sympathizer’ in Islamophobic attack, Trump ally says ‘there will be another 9/11 in NYC’.”

ভারতের শীর্ষ অর্থনৈতিক দৈনিকটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মামদানির বিরুদ্ধে ইসলামোফোবিক প্রচারণা সত্ত্বেও তিনি জয় পেয়েছেন এবং সেই জয় তাঁকে একটি বৈশ্বিক প্রতিরোধের প্রতীক বানিয়েছে।

তারা লিখেছে, “নিউইয়র্কের ভোটাররা ভয়কে নয়, আশা ও মানবিক মর্যাদাকে বেছে নিয়েছে।”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

বিশ্বমিডিয়াগুলোর টোনে দুটি বিষয় স্পষ্ট -এক, মামদানির বিজয়কে তাঁরা এক “নতুন প্রজন্মের” রাজনৈতিক জাগরণ হিসেবে দেখছে;

দুই, এই জয়ের মধ্যে দেখা যাচ্ছে বহুজাতিক ও অভিবাসী পরিচয়ের স্বীকৃতি।

BBC, CNN, ও The New York Times-এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এই ফলাফল ভবিষ্যতের আমেরিকান রাজনীতির দিকনির্দেশক হতে পারে বিশেষ করে “grassroots-based multicultural leadership”-এর উত্থান হিসেবে।

জোহরান মামদানির এই হাসিমাখা বিজয় শুধুই নিউইয়র্ক সিটির নতুন মেয়রের গল্প নয় এটি এক বিশ্বমানবের গল্প।

একজন অভিবাসীর সন্তান, যিনি ভাড়া, শ্রম, ন্যায় ও মানবিক মর্যাদার কথা বলে জয় ছিনিয়ে নিলেন আমেরিকার সবচেয়ে বড় শহরের হৃদয়।

এ কারণেই বিশ্বমিডিয়া একযোগে বলছে—“এটি শুধু নিউইয়র্কের নয়, আমেরিকার আত্মার জয়।”