70°F শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মেনু

গাজায় শান্তি প্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থা: একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন।

Rokon Pathan, Boston Bangla

প্রকাশ: ১৪ অক্টো ২০২৫ | নিউজটি দেখেছেন: ৫০
গাজায় শান্তি প্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থা: একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন।

গাজায় শান্তি প্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থা: একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন।

বস্টন বাংলা ডেস্ক

১৩ অক্টোবর ২০২৫।

২০২৩ সালের যুদ্ধের পর থেকে গাজা উপত্যকার রাজনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ২০২৫ সালের অক্টোবর নাগাদ শান্তি প্রক্রিয়াটি নতুন এক মোড়ে দাঁড়িয়েছে—কিছু আশার আলো দেখা গেলেও, চ্যালেঞ্জ এখনো বহাল। নিচে বর্তমান অবস্থা, প্রধান চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা তুলে ধরা হলো।

প্রেক্ষাপট

৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের নেতৃত্বে আক্রমণ ও পরবর্তী ইসরায়েলি সামরিক অভিযান গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় বিভিন্ন যুদ্ধবিরতি ও মানবিক চুক্তি সম্পন্ন হয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রথম বড় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও তা স্থায়ী হয়নি। বর্তমানে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবাহ আংশিকভাবে পুনরায় শুরু হয়েছে, এবং আলোচনায় নতুন কাঠামো তৈরির প্রচেষ্টা চলছে।

সাম্প্রতিক অগ্রগতি

অক্টোবর ২০২৫-এ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আংশিক শান্তি চুক্তি হয়। এই চুক্তির আওতায় কিছু জীবিত ইসরায়েলি হোস্টেজ মুক্তি পায় এবং সীমিত সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে। চুক্তির আলোচ্য বিষয়ে রয়েছে গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ কাঠামো।

চ্যালেঞ্জ ও বাধা

১. প্রশাসনিক কাঠামো নির্ধারণ: গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা নিয়ে দ্বন্দ্ব এখনো অব্যাহত। যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলো টেকনোক্র্যাটিক প্রশাসনের প্রস্তাব দিলেও হামাস এর বিরোধিতা করছে।

২. সহিংসতা অব্যাহত: যুদ্ধবিরতির পরও sporadic সহিংসতা ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে, যা চুক্তির স্থায়িত্বে প্রশ্ন তুলছে।

৩. মানবিক সংকট: খাদ্য, পানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের ঘাটতি এখনও প্রকট। গাজার প্রায় ৭০% জনসংখ্যা বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছে।

৪. রাজনৈতিক বিভাজন: হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ক্রমেই বাড়ছে। বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঘটনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৫. আন্তর্জাতিক সমর্থন: ইজিপ্ট, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় চুক্তি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও আর্থিক সহায়তা ও পুনর্গঠন তহবিল এখনো যথেষ্ট নয়।

সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ

বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনটি ধাপ গুরুত্বপূর্ণ:

• দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে পূর্ণ অস্ত্রবিরতি ও রাজনৈতিক চুক্তি বাস্তবায়ন।

• একটি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ বাহিনী ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা।

• পুনর্গঠন ও মানবিক সহায়তা জোরদার করা।

যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও অর্থনৈতিক সহায়তা বজায় রাখতে পারে, তবে গাজায় স্থায়ী শান্তির ভিত্তি স্থাপন সম্ভব।

সারসংক্ষেপ

গাজায় শান্তি প্রক্রিয়া এখন সংবেদনশীল এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। আংশিক যুদ্ধবিরতি ও হোস্টেজ বিনিময় শান্তির পথে আশার সঞ্চার করলেও, মানবিক বিপর্যয়, রাজনৈতিক অনৈক্য ও পুনর্গঠন ঘাটতি বড় বাধা হয়ে আছে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, আঞ্চলিক স্থিতি ও পক্ষগুলোর বাস্তবায়ন ইচ্ছার উপর।

বস্টন বাংলা | আন্তর্জাতিক বিভাগ

সম্প্রীতিই সমৃদ্ধির মূলমন্ত্র