জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ গাজার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত খসড়া পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে নতুন এক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি উদ্যোগের ভিত্তিতেই এ প্রস্তাবটি পাস হয়। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও সোমালিয়াসহ মোট ১৩টি দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়। তবে রাশিয়া ও চীন ভোটদান থেকে বিরত থাকে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রস্তাবে গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (International Stabilization Force – ISF) গঠনের কথা বলা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন দেশ সদস্য পাঠানোর আগ্রহ জানিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের নাম প্রকাশ করেনি।
অন্যদিকে, গাজার শাসনক্ষম দল হামাস প্রস্তাবটি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের সার্বভৌম অধিকারকে উপেক্ষা করে গাজায় “আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব” চাপিয়ে দেওয়ার মত। টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাস জানায়— প্রতিরোধ আন্দোলনকে নিরস্ত্র করার মতো প্রস্তাব আন্তর্জাতিক বাহিনীকে নিরপেক্ষতা থেকে দূরে সরিয়ে দেবে, যা তারা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, আইএসএফ-এর প্রধান দায়িত্ব থাকবে গাজা অঞ্চলে অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র নিস্ক্রিয় করা, বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মানবিক সহায়তার রুটগুলো সুরক্ষিত রাখা এবং ইসরায়েল-মিসরের সঙ্গে সমন্বিতভাবে শান্তি বজায় রাখা। একইসঙ্গে গাজায় নতুন প্রশিক্ষিত একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনী গঠনের কথাও উল্লেখ আছে — যা এতদিন হামাসের অধীনে পরিচালিত হচ্ছিল।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ জানান, আইএসএফ-এর লক্ষ্য হবে “গাজাকে সামরিকীকরণমুক্ত করা, সন্ত্রাসী অবকাঠামো ভেঙে ফেলা, অস্ত্র অপসারণ করা এবং সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা।”
গাজা সংকট ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এই প্রস্তাব— যা অঞ্চলের নিরাপত্তা, মানবিক সহায়তা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে বিশ্লেষকদের মত।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে