77°F রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মেনু

গাজা যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা

Online Desk, Boston Bangla

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টে ২০২৫ | নিউজটি দেখেছেন: ২২
গাজা যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা

গাজায় রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান টানতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা সামনে এনেছেন। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রস্তাব ঘোষণা করেন।

ট্রাম্প জানান, মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর এই পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। তার দাবি, হামাস ছাড়া বাকি সবাই প্রস্তাবটি ইতিবাচকভাবে নিয়েছে।

তিনি নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমি আশাবাদী সবার সম্মতি আসবে। যদি না আসে, তবে তোমাদের যেটা করতেই হয়, সে ব্যাপারে পূর্ণ সমর্থন থাকবে আমাদের।”

প্রায় দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলি অভিযানে ইতিমধ্যেই ৬৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন—যাদের বড় অংশ নারী ও শিশু। পুরো গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ, চলছে খাদ্য ও পানির তীব্র সংকট, রোগের প্রাদুর্ভাব আর ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি।

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, ট্রাম্পের পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য গাজাকে ‘সন্ত্রাসমুক্ত অঞ্চল’ হিসেবে গড়ে তোলা। উভয় পক্ষ সম্মত হলে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে, এবং ইসরায়েলি সেনারা নির্দিষ্ট অবস্থানে সরে যাবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মিকে মুক্ত করতে হবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল আজীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫০ বন্দি এবং আরও ১৭০০ গাজাবাসীকে ছেড়ে দেবে। এছাড়া মৃত জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার বিপরীতে সমপরিমাণ ফিলিস্তিনির দেহ হস্তান্তর করবে ইসরায়েল।

অস্ত্র নামিয়ে শান্তিপূর্ণ পথে ফেরার শর্তে হামাসের সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে। যারা গাজা ছেড়ে অন্য দেশে যেতে চান, তাদের নিরাপদে স্থানান্তরের ব্যবস্থাও থাকবে।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, চুক্তি কার্যকর হলে জাতিসংঘ ও রেড ক্রিসেন্টসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দ্রুত পূর্ণ মাত্রায় মানবিক সহায়তা পাঠাবে। এর মধ্যে অবকাঠামো পুনর্গঠন, হাসপাতাল স্থাপন, বেকারি চালু, ধ্বংসাবশেষ সরানো এবং সড়ক সংস্কারের মতো উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এছাড়া তিনি ঘোষণা করেন, একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসনিক কাঠামো—‘বোর্ড অব পিস’ গঠন করা হবে, যার চেয়ারম্যান থাকবেন স্বয়ং ট্রাম্প। এতে যুক্ত থাকবেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতা। এ বোর্ড বিশ্বব্যাংকসহ বৈশ্বিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করে নতুন একটি ফিলিস্তিনি সরকার গঠনে সহায়তা করবে।

তবে ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হামাস বা কোনো সশস্ত্র সংগঠন এ নতুন প্রশাসনিক কাঠামো কিংবা গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থায় কোনোভাবেই যুক্ত হতে পারবে না।

প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, নেতানিয়াহু তার সঙ্গে বৈঠকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন—তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিপক্ষে। ইউরোপের কয়েকটি দেশ যদিও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, ট্রাম্পের ভাষায়, “তারা মূলত ক্লান্ত হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কিন্তু আমার মতে, এটি একটি ভুল পদক্ষেপ।”