যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম সরকারি শাটডাউনের অবসান ঘটাতে অবশেষে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস অর্থায়ন বিল পাস করেছে। এই বিলটি এখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে, যার অনুমোদনের পর ফেডারেল এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে এবং ৪৩ দিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটবে।
সমঝোতার সূত্র ও বিলের মূল দিক
এই অচলাবস্থা নিরসনে সিনেট ও হাউসের মধ্যে সমঝোতা হয়, যেখানে ডেমোক্র্যাট পার্টির আটজন সিনেটর রিপাবলিকানদের সাথে যোগ দেওয়ায় বিলটি পাসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।
বিলটির প্রধান বিষয়গুলো হলো —
- স্বল্পমেয়াদী অর্থায়ন: বেশিরভাগ ফেডারেল এজেন্সির জন্য জানুয়ারি ৩০, ২০২৬ পর্যন্ত অর্থায়নের অনুমোদন।
- পূর্ণাঙ্গ অর্থায়ন: তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ— কৃষি ও খাদ্য প্রশাসন (USDA/FDA), সামরিক নির্মাণ ও ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্স, এবং আইন প্রণয়নকারী শাখা (Legislative Branch)—এর জন্য পূর্ণ অর্থায়ন নিশ্চিত করা হয়েছে।
- বকেয়া বেতন পরিশোধ: শাটডাউনের কারণে বেতনবঞ্চিত ফেডারেল কর্মীদের সকল বকেয়া বেতন দ্রুত প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
- স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকি: ‘অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট (Obamacare)’ ভর্তুকি বাড়ানোর প্রস্তাব সরাসরি অন্তর্ভুক্ত না হলেও ডিসেম্বরের মাঝামাঝি আলাদা ভোটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রিপাবলিকানরা।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও মতবিরোধ
যদিও শাটডাউন শেষের পথে, তবুও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তীব্র রূপ নিয়েছে।
- ডেমোক্র্যাটদের অসন্তোষ: স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকির বিষয়টি বিল থেকে বাদ দেওয়ায় ডেমোক্র্যাটরা ক্ষুব্ধ। হাউস মাইনরিটি লিডার হাকিম জেফ্রিস এ বিষয়ে তীব্র সমালোচনা করলেও, শাটডাউন সমাপ্তিকে তিনি “জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ” বলে স্বীকার করেছেন।
- রিপাবলিকান নেতৃত্বের দাবি: হাউস স্পিকার মাইক জনসন এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একে “নীতিগত জয়” হিসেবে দেখছেন। ট্রাম্প জানিয়েছেন, বিলটিতে স্বাক্ষর করে তিনি সরকারি কার্যক্রম দ্রুত স্বাভাবিক করবেন।
জনজীবনে স্বস্তি
শাটডাউনের কারণে বিমানবন্দর ফ্লাইট বিলম্ব, খাদ্য সহায়তা (SNAP) সংকট এবং ফেডারেল কর্মচারীদের বেতন বন্ধ — এসব সমস্যা আমেরিকানদের দৈনন্দিন জীবনে বিশাল প্রভাব ফেলেছিল। বিলটি পাস হওয়ায় এখন জনজীবনে স্বস্তি ফেরার আশা জেগেছে।
আগামী করণীয়
ফেডারেল কার্যক্রম পুনরায় শুরু হলেও এই অর্থায়ন অস্থায়ী, যা জানুয়ারির শেষ নাগাদ শেষ হবে। ফলে, কংগ্রেসকে ২০২৬ অর্থবছরের স্থায়ী বাজেট পাসের জন্য আরও এক দফা কঠিন আলোচনার মুখোমুখি হতে হবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষর পাওয়ার পরই সরকারি অফিসগুলো পূর্ণমাত্রায় কাজ শুরু করবে বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে।