79°F রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মেনু

আটলান্টায় ফোবানা সম্মেলন: প্রবাসে বাঙালির মিলনমেলা

Online Desk, Boston Bangla

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৫ | নিউজটি দেখেছেন: ৩৩
আটলান্টায় ফোবানা সম্মেলন: প্রবাসে বাঙালির মিলনমেলা

আটলান্টার ফোবানা সম্মেলনে প্রাণবন্ত মিলনমেলা, ফিরলো প্রবাসে বাঙালির শেকড়ের টান

আটলান্টার গ্যাস সাউথ কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হলো ফোবানা (ফেডারেশন অফ বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশনস ইন নর্থ আমেরিকা) সম্মেলন। মূল ফটকে পা রাখতেই মনে হচ্ছিল যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। শাড়ি, পাঞ্জাবি পরা মানুষের ভিড়, কানে ভেসে আসছে বাংলা গান আর আড্ডা—সব মিলিয়ে এক উৎসবের আমেজ।

এই মিলনমেলায় যোগ দিতে নিউইয়র্ক, কানাডা, শিকাগো, এবং ক্যালিফোর্নিয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রবাসী বাঙালিরা একত্রিত হয়েছিলেন। তাদের চোখেমুখে ছিল নিজ সংস্কৃতি আর দেশকে কাছে পাওয়ার আনন্দ। একজন মা তার সন্তানকে দেশের গানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন, যা ফোবানাকে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়ার এক সেতুবন্ধন হিসেবে তুলে ধরে।

 

সংস্কৃতি ও নেতৃত্ব: নতুন প্রজন্মের অঙ্গীকার

 

ফোবানা শুধু নাচ-গানের মঞ্চ নয়, এটি সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চারও এক প্রাণকেন্দ্র। কবি লিয়াকত হোসেন আবুর মতো সাহিত্যপ্রেমীরা এই মঞ্চকে সাহিত্যের মিলনস্থল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কাব্যজলসায় তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণে হলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল এক অদ্ভুত নস্টালজিয়া, যা প্রমাণ করে প্রবাসে থেকেও ভাষা ও সংস্কৃতি টিকে আছে।

সম্মেলনের প্রথম দিনের ব্ল্যাকটাই ডিনারে জর্জিয়ার মূলধারার রাজনীতিবিদরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সিনেটর শেখ রহমান এবং নাবিলা ইসলামের মতো বাংলাদেশি আমেরিকান নেতৃত্বের প্রশংসা করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়, যা প্রবাসে বাংলাদেশি পরিচয়ের দৃঢ়তা প্রমাণ করে।

 

সম্পর্ক স্থাপন ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব

 

কানসাস থেকে আসা ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান রেহান রেজা বলেন, এবারের সম্মেলনে নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ তাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দিয়েছে। নিউজার্সি থেকে আগত শিল্পপতি গোলাম ফারুক ভুঁইয়া মনে করেন, এই ধরনের সম্মেলন প্রবাসীদের মধ্যে দূরত্ব কমায় এবং তাদের একই পরিবারের অংশ হিসেবে একত্রিত করে।

তিন দিনব্যাপী এই জমজমাট আয়োজনে বিনোদন, সেমিনার, ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং, এবং ইয়ুথ ফোরামের মতো নানা কার্যক্রম ছিল। এটি যেন শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ব্যবসা ও আড্ডার এক অসাধারণ সংমিশ্রণ। সম্মেলন শেষে বাইরে অন্ধকার নেমে এলেও ভেতরে তখনো উৎসবের আমেজ ছিল। ফোবানা হয়ে উঠেছে প্রবাসীদের জন্য শেকড়ের টান, নস্টালজিয়া এবং নতুন প্রজন্মের হাতে সংস্কৃতি তুলে দেওয়ার এক মহাযজ্ঞ।

এই সফল আয়োজনের পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন জর্জিয়া ফোবানার হোস্ট কমিটির সভাপতি ডিউক খান, কনভেনার নাহিদুল খান সাহেল, মেম্বার সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান ভুইয়া, কাজী নাহিদ এবং এম মৌলা দিলু। ফোবানা সেন্ট্রাল কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদ রব চৌধুরী এবং সেক্রেটারি আবীর আলমগীর সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।