মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউংয়ের বৈঠকের পরদিন যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান সংস্থা কোরিয়ান এয়ারের মধ্যে প্রায় ৩,৬০০ কোটি ডলারের একটি বড় চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির আওতায়, কোরিয়ান এয়ার বোয়িংয়ের কাছ থেকে ১০৩টি নতুন উড়োজাহাজ কিনবে।
চুক্তির বিস্তারিত
বোয়িং ও কোরিয়ান এয়ারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চুক্তিতে বোয়িংয়ের ৭৮৭, ৭৭৭ এবং ৭৩৭ মডেলের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কোরিয়ান এয়ারের প্রধান ওয়াল্টার চো আশা করছেন, এই নতুন উড়োজাহাজগুলো তাদের বহরকে আরও আধুনিক করে তুলবে। তিনি মনে করেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান সংস্থা আসিয়ানা এয়ারলাইনসের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পরও এটি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে কোরিয়ান এয়ারকে সহায়তা করবে।
বোয়িংয়ের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ বিভাগের প্রধান স্টেফানি পোপ এই চুক্তিকে একটি ‘যুগান্তকারী চুক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বোয়িং জানিয়েছে, এই চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার কর্মসংস্থান সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে।
যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগ বৃদ্ধি
এই চুক্তি এমন এক সময়ে হলো, যখন ট্রাম্প প্রশাসন বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। একই সময়ে, দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই মোটর গ্রুপও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিনিয়োগ ২,১০০ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে ২,৬০০ কোটি ডলারে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, এই অতিরিক্ত বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন কারখানা স্থাপন করবে, যেখানে বছরে ৩০ হাজার রোবট তৈরি করা সম্ভব হবে।
বোয়িংয়ের সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বোয়িং বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা এবং মাঝ আকাশে উড়োজাহাজের একটি অংশ ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা। ২০১৮ সালে একটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ জন আরোহী নিহত হন। এর কয়েক মাস পর আরেকটি বোয়িং বিমান দুর্ঘটনায় ১৫৭ জন মারা যান। এছাড়া, ২০২৪ সালে একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের জরুরি বহির্গমন দরজার প্যানেল উড়ন্ত অবস্থায় খুলে যায়, যা ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করে।
আপনার বিজ্ঞাপন এখানে